ইন্টারনেটে হ্যাকিং বা ম্যালওয়ার অ্যাটাক থেকে বাচতে যেসব ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হয় সেগুলোই সাইবার সিকিউরিটির মধ্যে পরে। ওয়েবসাইট বা সিস্টেমে অবৈধ অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে সাইবার সিকিউরিটি সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। যখন কেউ আপনার কম্পিউটার বা স্মার্টফোনকে বাইরে থেকে অ্যাক্সেস নেয়ার চেষ্টা করবে তবে তা হ্যাকিং এর আওতায় পরে।

আর এধরনের জিনিস প্রতিহত করতে সাইবার সিকিউরিটি সম্পর্কে আপনাকে অভিজ্ঞ হতে হবে। সাইবার সিকিউরিটি সম্পর্কে বুঝতে হলে আপনাকে আগে বুঝতে হবে আপনি আসলে কোন ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হতে পারেন। অর্থাৎ কি থেকে আপনাকে সুরক্ষিত থাকতে হবে

=====================================================================================

ভালনারবিলিটি
এই শব্দটি উচ্চারণ করাটা কিছুটা কঠিন হলেই এর মানে খুব সহজ। যখন কোন সিস্টেম বা ওয়েবসাইটের ডিজাইন, কোড বা সার্ভারে কোন সমস্যা বা খুঁত থাকে তখন তাকে ভালনারবিলিটি বলে। হ্যাকার রা এই ধরনের কিছু পেলে সাধারণত ওয়েবসাইট বা সিস্টেমকে অ্যাটাক করে। তাই আপনি যদি আপনার কম্পিউটার বা ওয়েবসাইটকে এই অ্যাটাক থেকে বাচাতে চান তবে আপনাকে এই বিষয়গুলো বুঝতে হবে। অর্থাৎ আপনার সিস্টেমে কি ধরনের সমস্যা আছে তা জানতে হবে।
======================================================================================= 

ব্যাকডোর
ঘরের পিছনের দরজা যেমন ব্যাকডোর তেমনি আপনার ওয়েবসাইট বা সিস্টেমের কথাও যদি এরকম গোপন কোন দরজা থাকে তাহলে সেটাই ব্যাকডোর। বিভিন্ন ফ্রী সফটওয়্যারে এরকম ব্যাকডোর অনেক সময় দেখা যায়। তাই ফ্রী জিনিস ব্যবহারে সাবধান হোন। এবং এই ধরনের ব্যাকডোর ব্যবহার করেই হ্যাকার আপনার কম্পিউটারের অনেক বড় ক্ষতি করে ফেলতে পারে।
========================================================================================
ডিরেক্ট অ্যাক্সেস অ্যাটাক
আপনার কম্পিউটারে যদি কার ফিজিক্যাল অ্যাক্সেস থাকে তাহলে সে অনায়াসেই আপনার কম্পিউটার থেকে ডাটা কপি করে নিতে পারে। আপনি জানতেও পারবেন না। তাই আপনার কম্পিউটারে যদি খুব গুরত্তপূর্ণ তথ্য থাকে তবে সেগুলো এনক্রিপ্ট করে রাখুন। এবং ভাল মানের অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার ব্যবহার করুন। এবং সবাই যেন আপনার পার্সোনাল কম্পিউটার ব্যবহার করতে না পারে সে ব্যাপারে নিশ্চিত করুন।
========================================================================================

ফিশিং
ফিশিং সম্পর্কে অনেকেই জানেন। কারণ ফেসবুক অ্যাকাউন্ট গুলো সাধারণত এই ধরনের অ্যাটাক করেই হ্যাক করা হয়। যখন বড়শি দিয়ে মাছ ধরা হয় তখন মাছের জন্য টোপ হিসেবে ছোট মাছ বা খাবার ব্যবহার করা হয় আর মাছ না বুঝেই সেই টোপ গিললেই বড়শিতে ধরা পরে। এভাবে ইন্টারনেটে অনেক সময় এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।

ধরুন কেউ আপনাকে একটি লিঙ্ক দিল। আপনি কিছু চিন্তা না করেই সেই লিঙ্কে ঢুকে দেখলেন ওয়েবসাইটটি পুরো ফেসবুক এর মত। আপনি কিছু না চিন্তা করেই সেখানে আপনার ইমেইল আর পাসওয়ার্ড দিয়ে লগ ইন করতে গেলেন। এবং আপনি যখনই আপনার ইমেইল আর পাসওয়ার্ড দিবেন সাথে সাথে সেই ইমেইল আর পাসওয়ার্ড যে ওয়েবসাইটটি বানিয়েছে তার কাছে চলে যাবে। তাই সে চাইলেই আপনার অ্যাকাউন্ট নিজের করে নিতে পারে।

=========================================================================================

হ্যাকিং এর শিকার হতে পারে যেসব কম্পিউটার বা সিস্টেম

আমি আগেই বলেছি যেকোনো ডিজিটাল যন্ত্র যেগুলো মাইক্রোপ্রসেসর দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা হয় তার প্রায় সবই হ্যাক করা সম্ভব। তবে আমরা এখানে হ্যাকিং বলতে গুরুত্বপূর্ণ সিস্টেম হ্যাকিং সাধারণত বোঝাই। সাধারণত যেসব ওয়েবসাইটে অর্থ লেনদেন করা হয় সেই সব ওয়েবসাইটগুলো বেশি হ্যাক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

যেহেতু এসব ওয়েবসাইট বা সফটওয়্যারের সাথে অর্থ জড়িত তাই এধরনের ওয়েবসাইট এর সিকিউরিটি অন্যান্য ওয়েবসাইট থেকে বেশি। তাই যারা প্রোগ্রামিং পারদর্শী না এবং যারা সাইবার সিকিউরিটি সম্পর্কে খুব বেশি জানেন না তাদের পক্ষে এরকম ওয়েবসাইট হ্যাক করা সম্ভব না। তারপরেও সবসময় সাবধান থাকতে হবে।

বিভিন্ন কোম্পানি ছারাও সাধারণ ইউজার দের কম্পিউটারও হ্যাক হয়। এধরনের হ্যাকিং এর প্রধান কারণ ডাটা সংগ্রহ। আবার বিভিন্ন ওয়েবসাইট এর সিকিউরিটি চেক করার জন্যও অনেক সময় ওয়েবসাইটের ইউজার আইডি হ্যাক করা হয়। এছাড়াও সাধারণ ইউজারদের ব্যবহৃত কম্পিউটার বা স্মার্ট-ফোনও হ্যাকিং এর শিকার হতে পারে।

দিন দিন যতই প্রযুক্তি আমাদের আমাদের সাহায্য করছে ঠিক তেমনি যেসব যন্ত্রে কম্পিউটার প্রসেসর ব্যবহার করা হয় সেইসব যন্ত্র সবসময় সুরক্ষিত রাখতে হবে। সাইবার সিকিউরিটি শুধুমাত্র একটি বিষয় নয়। একজন সাইবার সিকিউরিটি বিশেষজ্ঞ হতে আপনাকে অনেকগুলো বিষয় সম্পর্কে জানতে হবে। তার কিছু আমি উপরেই বলেছি। তবে শুধু মাত্র শিখলেই হবে না নিয়মিত নিজেকে সময়ের সাথে আপডেটেড রাখতে হবে।
أحدث أقدم